সময়মতো বিয়ে দেয়া বিয়ে করা কেন জরুরী
এক শহরে সৈয়দ বংশের এক মেয়ে বাস করত। সে অত্যন্ত নেক ও সৎ ছিল। কিন্তু তার বিয়ে হয়নি।
সে সারা দিন রোযা রাখত আর রাতভর নফল নামায পড়ত। প্রতিবেশী নারীরা তার অনেক প্রশংসা করত। তারা এই মেয়ের দ্বারা দুআ করাত। তাকে হাদিয়া-উপঢৌকন দিত।
একবার এই মেয়ে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। মহল্লার অন্যান্য যুবতি মেয়েরা তার সেবা করার জন্য তার ঘরে একত্র হয়ে গেল। তাদের মধ্যে কথাবার্তা চলছিল, তো এক মেয়ে সৈয়দ বংশের মেয়েটিকে বলল, আপনি আমাদের এমন কিছু নসীহত করুন যা সারা জীবন আমাদের কাজে আসবে।
সৈয়দ বংশের মেয়েটি বলল, হ্যাঁ আমি তোমাদেরকে জীবনের শ্রেষ্ঠ নসীহতটিই করব। আর তা হলো, যখনই তোমাদের উপযুক্ত পাত্র মিলে যায় বিয়ে করতে কখনো বিলম্ব কোরো না। এ কথা শুনে উপস্থিত মেয়েরা অনেক অবাক হলো। এক মেয়ে জিজ্ঞাসা করল, আপনি আমাদেরকে দ্রুত বিয়ে করে নেয়ার উপদেশ দিচ্ছেন; অথচ আপনি নিজেই তো বিয়ে করেননি।
সৈয়দ বংশের মেয়েটি বলল, আমি নিজের মনের অবস্থা মানুষের কাছে কীভাবে প্রকাশ করি? আমার বিয়ে বিলম্বিত হয়ে গেছে, তাই আমার প্রবৃত্তি আমাকে জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্য তাড়া করছিল। নামায, তিলাওয়াত কোনো কিছুতেই আমার মন বসতো না।
আমি দিনে রোযা রাখতাম। রাতে ইবাদতে মগ্ন থাকতাম। এতৎসত্ত্বেও জৈবিক তাড়নার প্রভাবে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। রাতে যখন আমি কুরআন তিলাওয়াত করতাম আর গলির বৃদ্ধ পাহারাদার আওয়াজ করত, আমার মন চাইত তাকে ডেকে এনে আমার চাহিদা পূরণ করি। কয়েকবার আমি দরজা পর্যন্ত গিয়ে মান-সম্মানের ভয়ে ফিরে এসেছি।
কেননা এতে সারা জীবনের অর্জিত মান-সম্মান ধুলোয় মিশে যাবে। লোকেরা বলাবলি করবে, সৈয়দ বংশের মেয়ে হয়ে এমন কাজ করেছে। আমি রাতভর বিছানায় ছটফট করতাম। কোনো পার্শ্বে ফিরেই স্বস্তি পেতাম না। আমি যে যন্ত্রণা সহ্য করেছি, আমি চাই না তোমরাও সেই যন্ত্রণা ভোগ করো।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যই বলেছেন, মেয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র পেয়ে গেলে দ্রুত তাকে বিয়ে দিয়ে দাও। আর যৌতুক ইত্যাদি নিছক কুপ্রথা ছাড়া কিছুই নয়।
- "এখন যৌবন যার" বই থেকে।