বই : কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে

মূল্য :   Tk. 250.0   Tk. 175.0 (30.0% ছাড়)
 

হৃদয়ের ছোট্ট ঘরে বাসা বেধেছে বিশাল আকাশ। আর আকাশের নীল রং যখন মাঝেমধ্যে রংধনুর রঙে রঙিন হয়। তখন, আনন্দের জোয়ারে তরঙ্গের মতো আন্দোলিত হয় ভিতরটা। আহা কি সুন্দর মনোরম দৃশ্য। চোখ যেনো পলক ফেলতে চাইছে না। সকাল গড়িয়ে দুপুর। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা কিভাবে যে দিন কেটে গেল কিছু বুঝে উঠতে পারলাম না।

যখন রাত্রের আগমন ঘটলো। এ দৃশ্য যেন সারাদিনের অবলোকন করা দৃশ্যের চেয়েও ভীষণ সুন্দর। ছোট-বড়, মাঝারি এক আলোর বাজার বসেছে বিশালাকাশে। চাঁদের হাসি দেখে মনে হয় সকল দুঃখের নিবারণকারী। তারাদের মিটিমিটি জ্বলজ্বল রূপের বাঁধন সে যে অন্যরকম এক সমীকরণ। আবার রাত পেরিয়ে যখন সূর্যের আলো ফোটে তখন আমাদের হৃদয় হেসে ওঠে।

ভাবনার বেড়াজালে আটকে গিয়েছি। কোন পথ খুঁজে পাচ্ছি না। এই সুন্দরের পিছনে কি কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে? এগুলো কেনই বা এত সুন্দর! কে সৃষ্টি করেছেন এগুলো? এ সমস্ত ভাবনা মনে বাধারই কথা। যাইহোক, চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলাম। শরীরে ক্লান্তি আসলে বিছানায় লুটিয়ে পড়লে মনে হলো আকাশ ছাদ জমিন বিছানা। আবারও আকাশ পানে তাকিয়ে ভাবলাম এ খুঁটিহীন ছাদ আমাদের কত ভাবে রক্ষা করছে। চোখের পলক ফেলার আগেই দেখতে পেলাম  আকাশ রাজ্যে পাখির মেলা। বায়ুমণ্ডলের স্তরে পাখি কিভাবে ডানা মেলে চলছেন বিষয়টি অন্যরকম ভাবনার বিষয়। বায়ুমন্ডলের বুক চিরে উড়ছে পাখি কোন এক লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে।

সারি সারি নারিকেল গাছ। সমুদ্রের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে পায়ের উপর। কত সুন্দর ঠান্ডা পানির ছোঁয়া। মনে হয় পুরো হৃদয়টাই শীতল হয়ে যায়। সেই পানি কোথায় যেন হারিয়ে যায় আবার ফিরে আসে তীরে। জোয়ার ভাটার প্রশ্ন আমাকে বেশ ভাবিয়েছে। উচু উঁচু পাহাড়ের মিনার। পাহাড়ের মিনার থেকে মনে হয় কেউ কল্যাণের পথে ডাকছে। পাহাড় যেন বলছে আমাকে নিয়ে একটু চিন্তা ভাবনা করো। দেখো না আমার গাঁ বেয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হচ্ছে। চতুর্দিকে নানা রঙের সমাহার। মনে হয় পুরো পৃথিবীটাই রং তুলিতে আঁকা। মৌমাছির চলন বলন পিপীলিকার জয়গান, মাকড়সার বেড়াজাল ভাবনায় ফেলেছে বারেবার।

লম্বভাবে সূর্যের কিরণ তাহার উপরে বায়ুর সমীরণ। মেঘ বৃষ্টির বন্ধুত্ব। বায়ু প্রবাহের ও সমুদ্র স্রোতের নানান দিকে সফর। পানির রূপের ও ধরনের পরিবর্তন। একাত্তর ভাগ জল বাদবাকি স্থল। আবহাওয়ার পরিবর্তন। দিনের পর রাত রাতের পরে দিন।

সোনালী সূর্যের আনাগোনা, চাঁদের অমূল্য হাসি। নক্ষত্রদের ঝাঁকে ঝাঁকে সমষ্টি হয়ে বসবাস। বিষয়গুলোতে রয়েছে অত্যন্ত মাধুর্য। লোহার মতো শক্তিশালী সম্পদ যদি আমাদের না থাকতো। তাহলে আমরা কখনো শিল্প বিপ্লব করতে পারতাম না। উন্নয়নের চূড়ায় উঠতে বেগ পাওয়া লাগতো। সুখসময় আমাদের কপালে জুটত না। এমন বিষয় ও ভেবেছি অনেক সময়।

আমাদের চোখের দৃষ্টি দূর সীমা অতিক্রম করে। খাঁচার ভিতর অদৃশ্য পাখি চলাফেরা করে। ধমনী ধমনী শিরায় শিরায় রক্তবিন্দু প্রবাহিত হয়। শ্বাস-প্রশ্বাসের গাড়ি চলতে থাকে কোন ঝামেলা ছাড়াই। সব মিলিয়ে মনে হয়েছে, এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে কোন এক মহান রহস্য। কার ইশারায় হচ্ছে এসব। তিনি কে? কে তিনি? উত্তরটা মহান রবের কাছ থেকে শুরুতেই পেয়েছি কুরআনের পাতায়। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পবিত্র কুরআনের শুরুতেই বলেন,

ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।  (সূরা আল ফাতিহা; আয়াত: ০১)

মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এসব নিদর্শন সমূহ সৃষ্টি করেছেন আমরা যেন তাঁর সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে চিন্তা ভাবনা করি। তাঁর নিখুঁত সৃষ্টি সম্পর্কে যেন আমরা শুকরিয়া আদায় করি। আলহামদুলিল্লাহ। মানুষের চলতে ফিরতে যা যা প্রয়োজন সকল কিছুর বন্দোবস্ত তিনি করেছেন। এসবে তিনি অবহেলার আশ্রয় নেন নি। তিনি অসীম দয়ালু ও মেহেরবান। আমাদের পালনকর্তা ও রিজিকদাতা। তিনিই থোকা থোকা ফুল ও ফল ফলান। আধারের ক্ষণে জলে স্থলে আমাদের পথ দেখান।

এরকম নানান বিষয় সম্পর্কে ভাবনার প্রয়াস পায় অন্তরে। কৌতুহলী এসব বিষয় সম্পর্কে ভাবতে খুবই ভালো লাগে। অন্তরে মহান রবের ভালোবাসা কাজ করে। তাঁর নিদর্শন গুলো দেখে আনন্দিত না হয়ে উপায় নেই। আর এসব চিন্তাভাবনার  বহিঃপ্রকাশ করতে সাহায্য করে সুরা রহমানের সেই মহামূল্য আয়াত। যেখানে মহান রব বলেন, অতএব, তোমরা তোমার পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? সেখান থেকে চিন্তাভাবনা গবেষণার খোরাক শুরু। পরবর্তীতে, কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে? বইটির মাধ্যমে মহান রবের নিখুঁত সৃষ্টির বর্ণনা কিঞ্চিৎ পরিমাণে হলেও বোঝার স্বাদ পায়। মহান রবের নিদর্শননামা উপলব্ধি করতে পারলে আমার আপনার আমাদের সকলের জন্য কল্যাণকর হবে। ইন শা আল্লাহ

আজও আরশ থেকে ঝরে পড়ে
রবের নুরানী আলোর পরশ।
তবুও ঘুরে তাকাই না তাঁর তরে
দেখে মনে হয় পুরো হৃদয়টা  অবশ।

বইয়ের নাম কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে
লেখক আব্দুল্লাহ আল মামুন (রাজশাহী)  
প্রকাশনী আশরাফুল মাখলুকাত প্রকাশন
সংস্করণ প্রথম প্রকাশ, ২০২৪
পৃষ্ঠা সংখ্যা 112
ভাষা বাংলা

আব্দুল্লাহ আল মামুন (রাজশাহী)