উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন প্রসঙ্গ
উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন প্রসঙ্গ বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা:
বিকাশমান সামাজিক ইতিহাস রক্তাক্ত অধ্যায় অতিক্রমণের ইতিহাস। ব্যক্তি, দল, দেশ, অঞ্চল অথবা ভূখণ্ডের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষসমূহ বিরাজমান পরিবেশ, প্রতিবেশ, সম্পদ ও সম্ভাবনার পুনর্বিন্যাস ঘটিয়েছে নানা মাত্রায়। প্রকৃতিকে জয় করতে এবং তার ফলভোগের ক্ষেত্রে মানুষের অভিযাত্রা সামাজিক ন্যায়বিচারকে বারবার লঙ্ঘন করেছে।
ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক পর্যায়ে তাই প্রকৃতির অংশ হিসেবে মানুষও পদানত হয়েছে মানুষের। মানুষকে পরাধীন করেছে, পরাভূত করেছে, এমনকি নিঃসংকোচে হত্যা করেছে। এসবের জন্য মানুষই মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য-স্বার্থ, জাত্যভিমান, ধর্মান্ধতা ও আধিপত্য বিস্তারের প্রত্যাশা রক্তক্ষরণের বড় কারণ হতে দেখা যায়।
অপরদিকে মানুষের কাছ থেকে মানুষকে মুক্তি ও স্বাধীনতা লাভের জন্য দীর্ঘ সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয়। আত্মমর্যাদা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ-অধিকারের লড়াই সে কারণে সবচেয়ে প্রাচীন বলে প্রমাণিত হতে পারে। দুর্বল ও নিরস্ত্র সাধারণ জনগণকে সুর-অসুরের যুদ্ধে সমানভাবে আত্মত্যাগ করতে হয়। তাই যে যুদ্ধ গৌরবের তাতে যেমন তার অবদান স্বীকৃত, তেমন যে যুদ্ধ অপরাধের তাতেও সে সমান ব্যবহৃত।
দর্শন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিল্পকলা স্বার্থান্বেষী মানুষের সংগঠিত দস্যুতা ও ক্ষমতাভোগকে সহজ করে দিয়েছে। অনগ্রসর মানুষ বৃত্তাবদ্ধ রয়েছে অসচেতনতা, অনবধানতা, আর অপ্রস্তুতির মধ্যে। ইতিহাসের গতিপথ যাদের আজ উন্নততর জীবনমান প্রদান করেছে তার ‘কার্যকারণ’ যেমন সত্য, তেমন অনগ্রসরতাও ইতিহাসহীন নয়। তবে অনগ্রসরদের মধ্যেও শ্রেণীচরিত্রের মতো শ্রেণী-অতিক্রমণের গোপন-অগোপন ইচ্ছাও রয়েছে। রাষ্ট্রের চরিত্রেও মানবিক ক্রূরতা, আগ্রাসন, অথবা লেজুড়বৃত্তির মতো বিচিত্র বিষয় লক্ষণীয়।
এসব নানা রকম অপেক্ষক উন্নয়নকে স্থানিক, স্বাদেশিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পর্যালোচনার যৌক্তিকতা তুলে ধরে। সে কারণে বাংলাদেশের একটি গৃহস্থালি প্রতিপত্তিশালী বহুজাতিক কর্পোরেশনের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এরা পরস্পর সম্পৃক্ত। উন্নয়ন ও অনুন্নয়নের শাস্ত্রীয় প্রত্যয়, তত্ত্ব ও পরিপ্রেক্ষিতসমূহ মানবীয় উন্নয়ন ও অমানবিক অনুন্নয়নের দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজতাত্ত্বিক অন্বেষণ সহজতর করে।
‘বিশ্বায়ন’ ও ‘মুক্ত-বাজার অর্থনীতি’ সম্পর্কে সিদ্ধান্তের জন্যেও বর্তমান বিশ্ববাস্তবতার সৃষ্টিশীল অতীত জানা দরকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর উন্নয়ন তত্ত্বসমূহ উন্নয়ন চর্চার ব্যর্থতা ও সফলতা যাচাইয়ের জন্যে এখনো গুরুত্ব বহন করে।
বইয়ের নাম | উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন প্রসঙ্গ |
---|---|
লেখক | মুহাম্মদ হাসান ইমাম |
প্রকাশনী | অবসর প্রকাশনা সংস্থা |
সংস্করণ | প্রথম প্রকাশ, ২০১৮ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 328 |
ভাষা | বাংলা |