ভাষাদর্শন : শব্দার্থ ও বাক্যার্থ
সমকালীন প্রতীচ্য দর্শনের ইতিবৃত্তে প্রথম দলের দার্শনিক সম্প্রদায় ‘যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদী’ বা ‘যৌক্তিক দৃষ্টবাদী’ এবং দ্বিতীয় দলের অনুসারীরা প্রচলিত ভাষা দার্শনিক হিসেবে সমধিক পরিচিত। মরিজ কি, আর্নস্ট ম্যাক, অটো নিউর্যাথ, হানস রিচেন বাক, ফিলিপস ফ্র্যাঙ্ক, হারবার্ট ফাইগল, রুডলফ কারনাপ, আলফ্রেড জুস এয়ার এবং কার্ল হেমপেল ছিলেন প্রথম দলের অনুসারী। আর উত্তরপর্বের ভিটগেনস্টাইন, গিলবার্ট রাইল, জন উইজডম এবং স্যার পিটার ফ্রেডরিক স্ট্রশন ছিলেন দ্বিতীয় দলের অনুসারী। সঙ্গত এবং মুখ্যত এই দুই দলের দার্শনিকের হাতেই ভাষাদর্শনের আধুনিক সৌধ নির্মিত হয়েছে। সর্বমোট নয়টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করে বর্তমান গ্রন্থের বক্তব্যধারা উপস্থাপন করা হয়েছে।
সাধারণ পাঠক-পাঠিকাসহ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার্থীদের গ্রন্থটি কাজে লাগবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। দর্শনের চিরাচরিত ঐতিহ্যের মতো ভাষাদর্শনের আলোচ্যসূচি নিয়েও দার্শনিক মহলে বিতর্কের কোনো অসদ্ভাব নেই। মূলত ঠিক কোন্ ধরনের ভাষা বা বাকরীতির যৌক্তিক বিচার-বিশ্লেষণ করলে দার্শনিক সমস্যার আশু সমাধান সম্ভব হতে পারে, এ প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই প্রস্তাবিত বিষয়টি নিয়ে দার্শনিকেরা এক অনাহূত বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এ বিষয়ে তারা প্রধানত দুটি দলে বিভক্ত। বিতর্কে অংশগ্রহণকারী একদল দার্শনিকের মতে স্বরূপত দর্শন বিজ্ঞানের যৌক্তিক বিচার-বিশ্লেষণ ছাড়া আর কিছুই হতে পার না।
তারা মনে করেন যে, যাদের আমরা দার্শনিক সমস্যা বলে আখ্যাত করি, সেইসব সমস্যাকে অন্তর্মূলে দূর করতে হলে বিজ্ঞানের মতো দার্শনিক আলোচনার জন্যও আমাদের একটি আদর্শ বা এমন একটি আর্টিফিসিয়াল ভাষা প্রণয়ন করতে হবে, যে ভাষায় একদিকে যেমন প্রতিপালিত হবে বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ নীতি এবং অন্যদিকে তেমনি অনুশীলিত হবে যুক্তিবিদ্যা বা ন্যায়শাস্ত্রের বিচার-বিশ্লেষণ পদ্ধতি। অর্থাৎ বিভিন্ন বিজ্ঞানে আমরা যে ভাষায় কথা বলি, বৈজ্ঞানিক আলোচনা ও গবেষণায় আমরা যে ধরনের ভাষা। প্রয়োগ করি, দার্শনিক আলোচনা ও গবেষণায়ও আমাদের অনুরূপ ভাষা প্রয়োগ করা একান্তভাবে অপেক্ষিত। এর ফলে বৈজ্ঞানিক অনুসিদ্ধান্ত নিয়ে যেভাবে আমাদের মধ্যে কোনো মতবিরোধ থাকে না, দার্শনিক অনুসিদ্ধান্ত নিয়েও তেমনি আমরা পারস্পরিক কোনো বিতর্কে জড়াবো না।
কিন্তু দ্বিতীয় দলের দার্শনিকেরা উপরিউক্ত মত স্বীকার করতে চান না। তারা মনে করেন আদর্শ বা আর্টিফিসিয়াল ভাষা সৃষ্টির মাধ্যমে দার্শনিক সমস্যার সমাধান আদৌ সম্ভব নয়, হতে পারে না। এরা মনে। করেন যে, উদ্ভূত সমস্যার সমাধানের জন্য আমাদের দৈনন্দিন। জীবনের প্রচলিত ভাষার ওপর গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। সমকালীন প্রতীচ্য দর্শনের ইতিবৃত্তে প্রথম দলের দার্শনিক সম্প্রদায় ‘যৌক্তিক প্রত্যক্ষবাদী’ বা ‘যৌক্তিক দৃষ্টবাদী’ এবং দ্বিতীয় দলের অনুসারীরা প্রচলিত ভাষা দার্শনিক হিসেবে সমধিক পরিচিত। মরিজ কি, আর্নস্ট ম্যাক, অটো নিউর্যাথ, হানস রিচেন বাক, ফিলিপস ফ্র্যাঙ্ক, হারবার্ট ফাইগল, রুডলফ কারনাপ, আলফ্রেড জুস এয়ার এবং কার্ল হেমপেল ছিলেন প্রথম দলের অনুসারী। আর উত্তরপর্বের ভিটগেনস্টাইন, গিলবার্ট রাইল, জন উইজডম এবং স্যার পিটার ফ্রেডরিক স্ট্রশন ছিলেন দ্বিতীয় দলের অনুসারী। সঙ্গত এবং মুখ্যত এই দুই দলের দার্শনিকের হাতেই ভাষাদর্শনের আধুনিক সৌধ নির্মিত হয়েছে।
সর্বমোট নয়টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করে বর্তমান গ্রন্থের বক্তব্যধারা উপস্থাপন করা হয়েছে। সাধারণ পাঠক-পাঠিকাসহ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার্থীদের গ্রন্থটি কাজে লাগবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।
বইয়ের নাম | ভাষাদর্শন : শব্দার্থ ও বাক্যার্থ |
---|---|
লেখক | ড. এম. মতিউর রহমান |
প্রকাশনী | অবসর প্রকাশনা সংস্থা |
সংস্করণ | প্রথম প্রকাশ, ২০১৬ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 402 |
ভাষা | বাংলা |