বই : বিজ্ঞানীদের কাণ্ডকারখানা

প্রকাশনী : আদর্শ
মূল্য :   Tk. 240.0   Tk. 180.0 (25.0% ছাড়)
 

'বিজ্ঞানীদের কাণ্ডকারখানা' বইয়ের পরিচিতি:

বিজ্ঞানীদের জীবনী বা কাহিনী মানেই তাদের জন্মসাল, মৃত্যু, কি কি করেছেন, কোথায় পড়েছেন এমন গৎবাদা সব তথ্য। সেখানে এই বইটি সত্যি খুবই আলাদা। বইটিতে ১৮ জন বিজ্ঞানীর মজার মজার ঘটনা উঠে এসেছে। যে সকল শিশু কিশোরদের মধ্যে আবিষ্কারের তীব্র নেশা আছে তারা হাউমাউ করে গিলতে পারে বইটি। কিছু চেনা গল্প কিন্তু কিছু গল্প সত্যি একদম নতুন। বোস স্যারের ভুল, আপেল বালকের মন্দ ভাগ্য, খাদ্যরসিক প্রকৌশলীর আগুনহীন চুলা এমন সব মজার নামকরণে লেখা বইটি। খুব ছোট ছোট তথ্য থেকে না চিন্তা থেকে যে কি বড় আবিষ্কার হইতে পারে সেটা এই বই পড়লেই না আপনি বুঝতে পারবেন! বইটিতে আরো একটু বইয়ের রেফারেন্স নেয়া হয়েছে আমাদের সবার প্রিয় আবদুল্লাহ আল মুতীর "আবিষ্কারের নেশায়" বইটিকে। সত্যি আপনি এই বইটি পড়লে আবিষ্কারের নেশায় ডুবে যাবেন।

'বিজ্ঞানীদের কাণ্ডকারখানা' বইয়ের লেখকের কথা:

বিজ্ঞানীদের জীবনীর কথা শুনলেই মনে হয় খটোমটো কিছু একটা, চোখে মোটা চশমাওয়ালা খুব প্রচণ্ড পড়ুয়া কারও কাহিনি, সারা জীবন ধরে যে বইয়ে নাক গুঁজে কাটিয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের জীবনটা আসলে মোটেও সে রকম নয়, বরং বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবনে অসাধারণ, মজার, অভাবনীয় সব ঘটনা ঘটেছে। এই ব্যাপারটা আমি জানতে পারি একেবারে ছোটবেলায়, যখন শ্রদ্ধেয় পারি একেবারে আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দীনের লেখা 'আবিষ্কারের নেশায়' বইটা হাতে পাই। এই বইটা পড়ে আমি হারিয়ে যেতাম যেন গ্যালিলিওর কারাগারে, পৃথিবী ঘুরছে বলায় যেখানে আটকে রাখা হয়েছে তাকে। অথবা নিউটনের সাথে আপেলগাছতলায়, কিংবা শুনতাম কানে আইনস্টাইনের বেহালার সুর। ছোট্টবেলায় পড়া সেই বইটা আমাকে বিজ্ঞানী হওয়ার অনুপ্রেরণা এমনভাবে দিয়েছিল যে, ৫ বছর বয়স থেকে কেউ আমাকে বড় হয়ে কী হবে এ রকম প্রশ্ন করলে আমি অবলীলায় বলতাম 'বৈজ্ঞানিক।' পাড়ার ছেলেরা হাসাহাসি করে নাম পর্যন্ত দিয়েছিল পচা ডিমের বিজ্ঞানী। কিন্তু তাতে করে বিজ্ঞানীদের জীবনী নিয়ে আমার মুগ্ধতা একটুকুও কমেনি; বরং বিজ্ঞানের কথা ভাবার, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিন্তা করার ক্ষমতা আমাকে দিয়েছিল এই বইটা।

কয়েক যুগ পরে আসলেই আমি এখন কম্পিউটারবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করি- পেশা আর নেশা- দুটোই বিজ্ঞান। ছোটবেলায় আমাকে বিজ্ঞানের জগতে নিয়ে আসা এই বিজ্ঞানীদের গল্পগুলোর কথা আমি ভুলতেই বসেছিলাম প্রায়, কিন্তু ভুলতে দিল না আমার ছেলে যায়ান। ওর বয়স সাত মাত্র, কিন্তু এখনই ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিজ্ঞানীদের গল্প শোনার জন্য প্রচণ্ড আগ্রহ, প্রতিদিন অন্তত দুজন বিজ্ঞানীর ওপরে কোনো মজার গল্প না শুনলে ঘুমাতে চায় না সে।

ওকে প্রতিদিন বিজ্ঞানীদের আর গণিতবিদদের গল্প বলতে গিয়ে আমার স্মৃতির তথ্যভান্ডারের সিন্দুকটা খুলে আবার ফিরে গেলাম সেই বিজ্ঞানীদের নানা গল্পের জগতে। ওকে বললাম, আইনস্টাইন, নিউটন, আর্কিমিডিস, মারি কুরি, এডিসনের গল্প, আমার সেই ছোটবেলার এবং এখনকারও সব স্বপ্নের নায়কদের কথা, যাদের প্রতিভা, আবিষ্কারের নেশা আর জ্ঞানের পিপাসা বিশ্বকে পাল্টে দিয়েছে চিরদিনের জন্য।

এই গল্পগুলো বলতে বলতে মনে হলো,  আগামী প্রজন্মের জন্য এগুলো লিখে রাখা বড়ই দরকার। টিভি, ফেসবুক, সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে আমাদের শিশুরা কাদের নিয়ে ভাববে, কাদের কাহিনি শুনে হবে অনুপ্রাণিত? বিজ্ঞান মজার, বিজ্ঞান আনন্দের, বিজ্ঞানীরাও মজার মানুষ- এসব গল্প তাই লিখে রাখাটা দরকার। বইটার শুরু এভাবেই।

সময়ের অভাবে আরও অনেক গল্প লিখে রাখতে পারিনি, কিন্তু আশা করছি এই বইটিতে লেখা গল্পগুলো পড়ে অন্তত একটি শিশু, একটি কিশোর, কিশোরী অথবা একটি তরুণ বয়সের মানুষ স্বপ্ন দেখবে বিজ্ঞানী হওয়ার। আমার যায়ান যেমনটা দেখছে। ভবিষ্যতের পৃথিবীটা তো ওদেরই।

ড. রাগিব হাসান
বার্মিংহাম, অ্যালাবামা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বইয়ের নাম বিজ্ঞানীদের কাণ্ডকারখানা
লেখক রাগিব হাসান  
প্রকাশনী আদর্শ
সংস্করণ প্রথম প্রকাশ, ২০১৮
পৃষ্ঠা সংখ্যা 96
ভাষা বাংলা

রাগিব হাসান