গল্পগুলো ভালোলাগার
সম্পাদনা: ছানা উল্লাহ সিরাজী
তাল পুকুরের চারপাশের ভীড়টা ক্রমশ বাড়ছে, আমি ভেসে ভেসে বেশ দেখতে পাচ্ছি। আমার অনেক লজ্জা লাগছে। কারণ কাপড়চোপড় এলোমেলো হয়ে আছে, ঠিক করতে পারছি না। অথচ আমাকে আগে কেউ এভাবে বেপর্দা অবস্থায় দেখেনি। ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে।
এরই মাঝে দেখলাম আলতাফ চেয়ারম্যান লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে এসেছেন। তাদের দিয়ে ঠ্যাংগিয়েও লোকজন সরাতে পারছেন না। চেয়ারম্যানের নির্দেশে চারজন গাট্টা-গোট্টা লোক পুকুরে নৌকা দিয়ে আমার লাশটাকে টেনে ডাঙ্গার কাছে নিয়ে এলো। সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত। কোনো কোনো স্থানে হাড়ও বের হয়ে গেছে। নিজেকে চিনতেই পারছি না। বড় চাদর পেঁচিয়ে আমাকে উঠোনের এক কোণায় জারুল গাছের ছায়ায় বিছানো চাটাইয়ের উপরে রেখে দিয়ে বাড়ির প্রাচীর লাগোয়া গেইট বন্ধ করে দিলো। জনমানবশূন্য উঠোনে লাল শাড়ি পরে খুবলে খাওয়া টাটকা লাশ হয়ে পড়ে আছি। অদূরে কিছু পাইক পেয়াদা কারও নির্দেশের অপেক্ষায় দন্ডায়মান।
বাড়ির ভেতর থেকে একজন বয়স্ক মহিলা নাকে কাপড় চেপে কয়েক মিনিটের জন্য আমার কাছ থেকে ঘুরে গেলেন, চেহারার কাঠিন্য ভাব তখনও বিদ্যমান। ওনার চেহারার নমুনা দেখে আমার ভীষণ হাসি পেল হা হা হা, তার স্বভাবটা বুঝি আর বদলালো না।
এক হাতে জ্বলন্ত আগর বাতি আরেক হাতে গোলাপজলের বোতল নিয়ে কেউ একজন কাঁদতে কাঁদতে আমার কাছে এলো। এসেই আমার শরীরে গোলাপজল ছিটিয়ে দিতে লাগল। ওহ আমি তাকে চিনতে পেরেছি তাকে আমি চাচী বলে ডাকি। গোলাপ জলটা অসহ্য লাগছে। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল; প্লিজ গায়ে দিয়ো না, ক্ষতগুলো জ্বলে যাচ্ছে….
বইয়ের নাম | গল্পগুলো ভালোলাগার |
---|---|
লেখক | আয়ান আরবিন |
প্রকাশনী | আয়ান প্রকাশন |
সংস্করণ | |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | |
ভাষা |