ফিরে এসো ক্ষমার পথে
অন্ধকার পথ থেকে ফিরে আসা কিছু তওবাকারীদের চমকপ্রদ ঘটনাবলী বেশ উৎসাহব্যঞ্জক, মুগ্ধকর। কারণ,—তাদের শিক্ষণীয় ঘটনাগুলো আমাদের সামনে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, ভয়-জয় ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় মোড়ানো সরল জীবনের অনুপম চিত্র তুলে ধরে।
সূর্যের আগমন না ঘটলেও; পৃথিবী আলোকিত না হলেও, বেলাশেষে ‘সত্যবিশ্ বাসী’ ব্যক্তি আল্লাহর পথেই ফিরে আসে।
তেমনি, পড়ন্ত বেলায় অস্তমিত সূর্যের বিদায় না ঘটলেও; রাতে জ্বলজ্বলে তারকারাজির আবির্ভাব না হলেও পরিশেষে তাওবাকারী আল্লাহর দিকেই রুজু হয়।
তওবাকারী—মাত্রই উন্মুখ হৃদয়ের অধিকারী, অধিক অশ্রুপাতকারী, অনুভূতিকাতর ও পরিমিত ভীতি লালনকারী…
তওবাকারী—সত্যবাদিতায় অগ্রগামী, কাজেকর্মে উদ্যমী, দৃঢ়চেতা মন ও সুষ্ঠু বিবেকের অধিকারী…
তওবাকারী—মিথ্যা দম্ভ ও অহংকার থেকে মুক্ত এবং সে অল্পতেই তুষ্ট..
তওবাকারী—ভয় ও আশা লালনকারী, ক্ষয় ও জয় এবং ধ্বংস ও মুক্তির মধ্যবর্তী…
তওবাকারী—হৃদয় ও মন যার প্রেমাস্পদের বিরহে কাতর। চেহারায় শোকের ছায়া অথচ অশ্রুতে বয় আনন্দের ফল্গুধারা…
তওবাকারী—যে মিলন ও বিচ্ছেদের মর্ম জানে। পাওয়া ও হারানোর বেদনা এবং গ্রহণ ও উপেক্ষার পরিণতি বোঝে…
তওবাকারী—যার প্রতিটি ঘটনায় লুকিয়ে থাকে শিক্ষা। যেমন, কবুতরের বাকবাকুম আওয়াজের অন্তরালে কখনো কান্না লুকিয়ে থাকে। পাখির চিরায়ত ডাকের আড়ালে কখনো লুকিয়ে থাকে বিষাদের করুণ সুর। বুলবুলির মিষ্টি ডাকের আড়ালেও লুকিয়ে থাকে শিক্ষা। তেমনি বিদ্যুতের উজ্জ্বল ঝলকানির পর শোনা যায় বিকট আওয়াজ!
তওবাকারী—স্রষ্টার আনুগত্যে যে তৃপ্তি খুঁজে পায়। ইবাদতের মাঝে দেখে সুন্দরের সমাবেশ এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান ও বিশ্বাসে লাভ করে অমীয় স্বাদ…
তওবাকারী—যার চোখের অশ্রুতে গল্প রচিত হয়। বেদনার কালিতে রচিত হয় কবিতামালা। কান্নার ফোঁটাই যার হয়ে যায় কথামালা!
তওবাকারী—স্বীয় সন্তানকে শত্রুর থাবা থেকে রক্ষাকারী মায়ের ন্যায়। গভীর সমুদ্রের ঘুর্ণিপাক থেকে নিরাপদে তীরে ফেরা ডুবুরীর ন্যায়। নিঃসন্তান অক্ষম পিতার ন্যায়, যাকে আগত পুত্রের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। কিংবা ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত গুরুতর অপধারী, যার কৃত অপরাধ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে…
তওবাকারী—যে নফসের প্রবৃত্তি ও গুনাহ থেকে নিজেকে মুক্ত করেছে। পাপাচারিতার বেড়ি থেকে কলবকে পবিত্র করেছে ও অন্ধকার থেকে আলোর পথে পা বাড়িয়েছে।
তওবাকারী—উচ্চবাক্যহীন নিরহংকার পাখির ন্যায় কিংবা ধুসর চাঁদ অথবা পুরনো তারকার ন্যায়; যার মাঝে বিশেষ সমারোহ নেই।
পাঠক! এসব তো গেলো তওবাকারীর কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা। বক্ষ্যমাণ বইয়ে আমি তওবাকারীর এমনই কিছু শিক্ষণীয় সত্য ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছি; যারা ইতোমধ্যেই তওবা করেছেন অথবা তওবা করে ফিরে আসতে চান, যারা আল্লাহর প্রতি অনুগত হতে চান কিংবা যারা তওবার দরোজা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বইটি সকলের জন্য। করুণাময়ের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন সবাইকে এ থেকে পূর্ণ উপকৃত করেন।
বইয়ের নাম | ফিরে এসো ক্ষমার পথে |
---|---|
লেখক | ড. মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান আরিফী |
প্রকাশনী | দারুল আরকাম |
সংস্করণ | প্রথম প্রকাশ, ২০১৮ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 120 |
ভাষা | বাংলা |