প্রিয় পদরেখা
আজকে আমরা যারা মুসলমান, ইসলাম নিয়ে গর্ববোধ করি, তাদের সহজে মুসলমান হওয়া ও ইসলামকে সহজভাবে পাওয়ার পেছনে একদল মানুষের নীরব ও নিভৃত সাধনা রয়েছে। যাদের ত্যাগ ও আত্মত্যাগ, দুনিয়ার উপর ইসলামকে প্রাধান্য দিয়ে ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করার ফলে আমরা ইসলামকে সহজেই পেয়ে গেছি। ইসলামি হুকুম-আহকাম সম্পর্কে সহজেই অবগত হতে পারছি। এর পেছনে রয়েছে সেসব নিভৃতচারী সাধকের অবদান যারা গোটা জীবনটাকেই ইসলামের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন। সেই নিভৃতচারী সাধকরা হলেন আমাদের আকাবির আসলাফ। পূর্বে একটা সময় গেছে যখন প্রত্যেক আলেমই ছিলেন আমলী নমুনা। একেকজন ছিলেন সুন্নতের জীবন্ত অনুসারী। যুহদের উপমা। শুধুমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছুটে গেছেন। মানুষকে ইসলাম ও ইসলামি বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত করেছেন।
আমাদের এদেশেও এমন অনেকেই ছিলেন। হাফেজ্জি হুজুর, শায়খুল হাদিস আজিজুল হক, গহরপুরী, খতিব উবায়দুল হক , মুফতী আমিনী, মুফতী আবদুর রহমান, মুহিউদ্দীন খান রহ.-সহ আরও অনেকেই। এদেশে ইসলাম ও মুসলমানদের পেছনে যাদের অবদান অপরিসীম। চাইলে তারা তাদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিশাল বিশাল ফ্ল্যাট, আলিশান বাড়ি গড়ে তুলতে পারতেন। রাজকীয় খাবারদাবারে নিজেদের ডুবিয়ে রাখতে পারতেন। কিন্তু তারা সেদিকে ভ্রুক্ষেপই করেননি। একেবারে নির্মোহ, নির্মল সাদাসিধে জীবনযাপন করে গেছেন। বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে, মাইলের পর মাইলা পায়ে হেটে ওয়াজ করে এসেছেন, যাতে সাধারণ মানুষ ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে। ইসলামকে বুঝতে পারে। এযুগে এসব বিরল।
আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাওয়া এসব নির্মোহ, নির্লোভ মানুষদের স্মৃতিচারণ নিয়ে লেখা বই ‘প্রিয় পদরেখা’। লব্ধপ্রতিষ্ঠ লেখক- সম্পাদক, দার্শনিক আলেমে দীন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আতাউর রহমান খান রহ.-এর সুযোগ্য উত্তরসূরি উবায়দুর রহমান খান নদভী তাঁর দেখা সেসব পূর্বসূরিদের নিয়ে স্মৃতিচারণ করে যেসব প্রবন্ধ লিখেছেন, এটা সেসব প্রবন্ধের সংকলন। ২৩জন পূর্বসূরিকে লেখা তার এই বইয়ে উঠে এসেছে পুরানা যুগের সেসব আলেমদের সাদাসিধা, সুন্নতের উপর পাবন্দ নির্মল জীবন। যার পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে তাদের জীবন, কর্ম, গুণাবলি, প্রতিভা ও বৈশিষ্ট্য। যাতে রয়েছেন আমাদের জন্য নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের মতো উপদেশ ও আদর্শ, পথ চলার পাথেয়।
বাংলাদেশি আলেমদের মধ্যে যে কয়েকজনের লেখার হাত শক্ত সাবলীল ও গতিশীল উবায়দুর রহমান খান নদভী তাঁদের প্রথম সারির একজন। দৈনিক ইনকিলাব ও মাসিক নেয়ামতসহ অনেক পত্রিকায় লেখালেখি ও সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন। সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা ও বিস্তৃত অধ্যয়ন তার লেখার গতিকে করেছে আরও বেগবান।
"প্রিয় পদরেখা" বইয়ের সূচীপত্র:
হিমালয়ের পায়ের কাছে—১৩
আল্লামা সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.
উষ্ণ হৃদয় ও দৃপ্ত চেতনার স্বাপ্নিক—৩৪
আল্লামা সুলতান যওক
বটবৃক্ষের ছায়া সুশীতল—৪৫
মাওলানা মুহিউদ্দীন খান
হাফেজ্জী হুজুরকে ঘিরে স্মৃতির বিস্ত পত্র—৭৬
বাংলার শাইখুল হাদীস পূর্ণতার প্রতিচ্ছবি—৮৮
শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ.
ময়মনসিংহ নামটি শুনলেই যার মুখ ভেসে উঠে চোখে—৯৫
মাওলানা হাফেজ ফয়জুর রহমান সাহেব রহ.
যে বার্তা রেখে গেলেন মুফতী আমিনী—১০১
আমার স্মৃতিতে ফকীহুল মিল্লাত—১০৮
মুফতী আব্দুর রহমান রহ.
এই যামানায় স্বর্ণযুগের মানুষ—১২৪
শাইখুল হাদীস আল্লামা এহসানুল হক সন্দ্বীপী রহ.
চলে গেলেন হযরত শাহ জালাল রহ.-এর এক জীবন্ত প্রতিনিধি—১৩৩
হাফেজ মাওলানা আকবর আলী রহ.
অনিঃশেষ পলায়ন-১৩৮
শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসহাক গাজী রহ.
সতীর্থদের ভালােবাসায় তিনি অমর হয়ে থাকবেন—১৪৪
আবু সাঈদ মুহাম্মদ ওমর আলী রহ
আবেগ আর প্রত্যয়ে ভরা দ্বীপ্তিময় দুটি চোখ—১৪৮
অধ্যাপক মাওলানা আখতার ফারুক রহ.
কালের কপােলতলে স্নিগ্ধ হাসির ঝিলিক—১৫৫
মাওলানা হারূন ইসলামাবাদী রহ.
মাটি মানুষ ও প্রকৃতির আপনজন—১৬৪
শায়খ নূরুদ্দীন গহরপুরী রহ.
শতাব্দীর পথযাত্রায় এরাই রাহনুমা—১৭৩
মাওলানা মাহমূদুর রহমান রহ.
শ্যামল বাংলায় ভূস্বর্গের ছায়া—১৭৬
মাওলানা সৈয়দ মুসলেহুদ্দীন রহ., আল্লামা ইমাম আহমদ রহ. এবং মাওলানা রিয়াসত আলী রহ.
যেকোনাে সুবাদে সম্পর্ক জুড়তে পারাটাই যেখানে সৌভাগ্য—১৮২
মাওলানা মুহিব্দুর রহমান রহ.
অনুসরণীয় প্রিয় পদরেখা, শ্যামল বাংলার সৌন্দর্য—১৮৭
আল্লামা সিরাজুল ইসলাম রহ.
নিভৃতচারী এক মানবরত্ন : হাফেজ ওমর রহ.-১৯১
ইবনে সদর সাহেব হুযুর রহ.
আমার দোস্ত আমার শায়খ—১৯৭
শায়খুল হাদীস আল্লামা কুতুবুদ্দীন রহ.
বইয়ের নাম | প্রিয় পদরেখা |
---|---|
লেখক | মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী |
প্রকাশনী | রাহনুমা প্রকাশনী |
সংস্করণ | ১ম প্রকাশ, ২০১৬ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 208 |
ভাষা | বাংলা |