ইতিহাস-ঐতিহ্যে জৈন্তিয়া : লৌহ প্রাচীন ও মধ্যযুগ
জৈন্তিয়া কেবল একটি জনপদ নয়, নয় ভারত-বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক ইউনিট। জৈন্তিয়া প্রাচীন ইতিহাসের এক সূতিকাগার, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির আঁতুড়ঘর, ধর্ম-দর্শনের লালনভূমি, মানবসভ্যতার উর্বর চারণভূমি, নিসর্গের এক বিস্ময় জাগানিয়া লীলাভূমি এবং প্রাগৈতিহাসিক ও ঐতিহাসিক কালের নানা উপাদানের তীর্থস্থান।
মহাকালের গর্ভে চাপা পড়ে যাওয়া ইতিহাসের জ্যোতির্ময় সাংস্কৃতিক স্মারকগুলো এবং যাপিত জীবনে বর্তমানের আধিক্য ও ভবিষ্যতের স্বপ্ন-সাধনার ভেতর মরিচা ধরে ধূসর হয়ে গেছে সোনালি ঝকঝকে উপাদান। দিনের আলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা আকাশের তারার মত আচ্ছন্ন হয়েছিল বিগত দিনের কীর্তিগুলো।
কৃতী গবেষক মো. কলিম উল্লাহ বর্তমানের ভেতর বাস করেও নিভৃতভাবে খুঁজে বেড়ান অতীতকে। অতীতের মরিচা ধরা উপাদানগুলোকে তুলে ধুয়ে সাফ-সুতরো করে খুঁজে বের করেছেন ইতিহাসের 'হারানো সূত্র'। নির্মোহ ও বস্তুনিষ্ঠভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা 'জানার মাঝে অজানারে' তিনি খুঁড়ে এনেছেন একজন সত্যিকার সাধকের মত; যুক্তি ও সত্যের কষ্টিপাথরে যাচাই করে নির্যাস মলাটবদ্ধ করেছেন ইতিহাস-ঐতিহ্যে জৈন্তিয়া (জৈন্তাপুর খণ্ড) গ্রন্থে। ইতিহাসের নানান স্মারক, নিদর্শন ও স্থাপনার ভেতর দিয়ে আবিষ্কার করার চেষ্টা করেন 'সোনার জৈন্তিয়া'র সোনালি অতীতকে।
মো, কলিম উল্লাহ কেবল আমির-উমরাহ-আশরাফদের ক্ষমতার পালাবদলের বর্ণনার গতানুগতিকতায় আবদ্ধ রাখেননি, বরং মানুষের উত্থান-পতন, সুখ-দুঃখের প্রতিও দৃষ্টি নিবেদন করেছেন অত্যন্ত মমতাভরা হৃদয় দিয়ে। অধিকন্তু রথীমহারথীদের ক্ষমতার পালাবদল আর ব্রাত্যজনের যাপিত জীবনের বিবরণের ক্ষেত্রে তিনি কোনও নির্দিষ্ট সময়ের খিড়কিতেও নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি বরং কালানুক্রমিকভাবে ঘটনার পরম্পরা বয়ান করেছেন লৌহযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত। বিদ্যায়তনিক জগতে বইটি নিঃসন্দেহে এক নতুন সংযোজন। এর বর্ণনা সহজবোধ্য, ভাষ্য অত্যন্ত প্রাঞ্জল। বইটি বিদগ্ধজন ও ইতিহাস-ঐতিহ্য অনুরাগীসহ পাঠকের কাছে সমাদৃত হোক- এটাই প্রত্যাশা।
-- আব্দুল হাই আল-হাদী, লেখক ও পিএইচ.ডি গবেষক
বইয়ের নাম | ইতিহাস-ঐতিহ্যে জৈন্তিয়া : লৌহ প্রাচীন ও মধ্যযুগ |
---|---|
লেখক | মোঃ কলিম উল্লাহ্ |
প্রকাশনী | নাগরী |
সংস্করণ | প্রথম প্রকাশ, ২০১৮ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 399 |
ভাষা | বাংলা |