আরব মনীষীদের দৃষ্টিতে দারুল উলুম দেওবন্দ
মুখবন্ধ
সকল প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য। দরুদ ও সালাম সায়্যিদুল মুরসালিনের ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজন এবং সকল সাহাবায়ে কেরামের ওপর।
জামিয়া ইসলামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম দেওবন্দের ব্যাপারে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই! তার বিরুদ্ধে অসত্য ও মিথ্যাচারও কম করা হয়নি! একটা গোষ্ঠী তো এমন রয়েছে, যারা সর্বদা এর ক্ষতি করতে চায়, সম্মান বিনষ্ট করতে চায়! বিশেষ করে তারা দেওবন্দের উলামায়ে কেরাম ও অন্যান্য অঞ্চলের উলামায়ে কেরামের মাঝে; আরো নির্দিষ্ট করে বললে সৌদী আরবের উলামায়ে কেরামের মাঝে ফাটল সৃষ্টি করতে চায়! অথচ হিন্দুস্তান ও তার বহিরাঞ্চলে গত দেড়শত বছর যাবত দারুল উলুম দেওবন্দ অনবদ্য দ্বীনী খেদমতের আঞ্জাম দিয়ে আসছে। বিশেষত পরবর্তীকালে হিন্দুস্তানে প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য মাদ্রাসা ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠানগুলো যে তারই ধূলিকণায় ধন্য হয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেজন্য বন্ধুমহল থেকে বারবার পীড়াপিড়ী করা হচ্ছিলো যেন, আমল ও আকীদার থেকে দেওবন্দের বাস্তব চিত্র উন্মোচন করা হয়।
হিন্দুস্তানের কয়েকজন দ্বীনী আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন শ্রেষ্ঠ আলেমের হাতে ১২৮৩ হিজরী সন মোতাবেক ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে গত দেড় শতাব্দীকাল যাবত সে উদ্যমতার সাথে দ্বীনী খেদমতের শীর্ষ চূড়া আরোহন করে আছে। যুগে যুগে সমসাময়িক বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ের ক্ষেত্রে দেওবন্দ যা হক ও সঠিক মনে করেছে সেটাই ব্যক্ত করেছে। চাই এতে করে কেউ সন্তুষ্ট হোক, কিংবা ক্রদ্ধ হোক! আল্লাহর হুকুমের ব্যাপারে কোনো নিন্দুকের নিন্দা সে গায়ে মাখেনি।
বস্তুত এটি এমন একটি আন্দোলন যা হিন্দুস্তানে বসবাসরত মুসলামলদের শিক্ষা-দীক্ষা, সামাজিকতা এবং দ্বীনী ও চিন্তাগত উৎকর্ষ সাধনে বদ্ধপরিকর হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। অত্র অঞ্চলে মুসলমানদের ইসলামী পরিচয়-পরিচিতি ও দ্বীনদারিতে দেওবন্দের ছাপ স্পষ্ট। এখানকার মুসলিম জনসাধারণ তাদের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহে তাদের কাছেই ধর্না দেয়।
আমাদের এ ভূমিতে বিভিন্ন ধর্ম ও মতবাদের, আদর্শ ও দৃষ্টিভঙ্গির এবং সভ্যতা ও সংস্কৃতির মাঝে চিরন্তর লড়াই ও দ্বন্দ চলে আসছে। সাথে আছে দলীয় গোড়ামী, রাজনৈতিক খুনাখুনি এবং বিভিন্ন দলীয় জোট ও গোষ্ঠী। এসব কিছুর মাঝে থেকে দেওবন্দ থেকে যারা পড়ালেখা শেষ করেছে, কিংবা সেখানকার ছাত্রদের কাছে যারা পড়ালেখা করেছে, তারাই এ অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে উম্মাহর নেতৃত্বের ভার গ্রহণ করেছে।
এ কথাগুলো লেখার কোনো ইচ্ছা আমাদের ছিলো না। কিন্তু আমাদের পাক-ভারত উপমহাদেশের কিছু মুসলমানকে তাদের প্রবৃত্তি প্ররোচীত করেছে। সেজন্য তারা দেওবন্দের বিরুদ্ধে প্রবল আপত্তি ও অপবাদ আরোপ করতে উঠেপড়ে লেগেছে! শুধু বিরোধীতা নয়; ইসলাম ও মুসলমানদের খেদমতে তার ত্যাগ-তিতিক্ষার কথাকেও অস্বীকার করছে! বিশেষত সৌদী আরবের উলামা-মাশায়েখের কাছে দেওবন্দের সুনাম-সুখ্যাতি ক্ষুন্ন করতে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমে পড়েছে! এমতাবস্থায় এ কথাগুলো লেখা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় ছিলো না!
বইয়ের নাম | আরব মনীষীদের দৃষ্টিতে দারুল উলুম দেওবন্দ |
---|---|
লেখক | নাছির বিন ওয়াকিল সিরাজী |
প্রকাশনী | ফুলদানী প্রকাশনী |
সংস্করণ | |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | |
ভাষা |