রউফুর রহীম : নবি-জীবনের বিশুদ্ধ ও বিস্তারিত গ্রন্থনা- ১ম খণ্ড
আপনার মহৎ পরিকল্পনায় যদি কারও সমর্থন না পান, তবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনী পড়ুন। যদি মনে হয় জীবনে অনেক বাধা পেরিয়ে এসে অনেক কিছু অর্জন করে ফেলেছেন, রাসূলের জীবনী পড়ুন। সত্য ও ন্যায়ের পথে দাঁড়ানোর কারণে যদি জীবন হুমকির মুখে পড়ে তবে সিরাত পড়ুন। যদি মানুষের কষ্ট দেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার কোনো রাস্তা খুঁজে না পান, তবে সিরাতের কাছে ফিরে যান।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত সব মানুষের জন্য আশার বাতিঘর, কর্তব্যের পথ নির্দেশিকা। এজন্যই আল্লাহ তাআলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেছেন উসওয়াতুল হাসানাহ—অনুসরণযোগ্য সর্বোত্তম আদর্শ।
নবীজির শৈশব আর আমাদের সন্তানেরা… প্রকৃতির কোলে শিশুরা যেন প্রাণবন্ত থাকে। এর নির্মল বাতাস ও মিষ্টি রোদ খুবই উপকারী। সন্তানদেরকে মরুভূমিতে (প্রকৃতির সান্নিধ্যে) লালন-পালন করানোটা স্বভাবের পরিশুদ্ধতা, শারীরিক গঠন মজবুত এবং অনুভূতি, চিন্তার স্বাধীনতা ও আবেগের যুক্তিগ্রাহ্যতা সুতীক্ষ্ণ করার জন্য খুবই উপযোগী।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সন্তানরা আজকাল বসবাস করছে পরস্পর লাগোয়া বাসার সংকীর্ণ কিছু ফ্ল্যাটে, যা মুরগির খোয়াড়ের চেয়ে বেশি কিছু না; ভেতরের বাসিন্দারা সারাক্ষণ বন্দি সেখানে। মুক্ত বিহঙ্গের মতো আপন খেয়ালে ছুটে বেড়ানোর আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত। তারা জানে না নির্মল পরিবেশে বেঁচে থাকা এবং বুকভরে শ্বাস নেওয়ার কী স্বাদ!
সন্দেহ নেই, আধুনিক সভ্যতায় স্নায়ু কিংবা পুরো শরীরে যে অসুস্থতা বাসা বেঁধেছে তা মূলত প্রকৃতি থেকে দূরে থাকা এবং কৃত্রিমতায় মেতে থাকার কারণেই। মরুভূমির প্রতি মক্কাবাসীদের যে ঝোঁক সেটাকে আমরা অবশ্যই সম্মান জানাতে পারি। তারা তাদের সন্তানদেরকে শক্ত-সামর্থ্য করে গড়ে তোলার জন্য প্রথম খেলার মাঠ হিসেবে বেছে নিত মরুভূমির মতো খোলামেলা জায়গাকে।
অনেক শিক্ষাবিদই আশা করেন যে, প্রকৃতির অবারিত মাঠ, খোলা আকাশের নিচে বিস্তীর্ণ সবুজের গালিচা, আকাশের গায়ে হেলান দেওয়া পাহাড়সারি—এমন নির্মল পরিবেশই হবে শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভোরের সোনালি আলো, সন্ধ্যার আবছায়া, আকাশের নীলিমা, দিগন্তের লালিমা, চাঁদের জোৎস্নায় আপ্লুত হবে তারা। মোহাবিষ্ট হয়ে থাকবে প্রকৃতির রহস্য চিন্তায়, খুঁজে ফিরবে এর স্রষ্টাকে।
কিন্তু আফসোস, বর্তমান শহুরে সভ্যতায় শিশুদের নিয়ে এমন চিন্তা স্বপ্নেই সম্ভব। বাস্তবায়ন বড়ই কঠিন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন সুযোগ পেয়েছেন। আল্লাহই তাঁকে সুযোগটি করে দেন। তিনি সা‘দ গোত্রে থেকে থেকে বিশুদ্ধ আরবি ভাষা রপ্ত করেন। যার কারণে পরবর্তীকালে তিনি হয়ে ওঠেন সৃষ্টির সেরা বিশুদ্ধভাষী। একবার সাহাবি আবু বাক্র রাযিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহর কাছে জানতে চান, “হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনার চেয়ে বেশি বিশুদ্ধভাষী আমি আর কাউকেই দেখিনি।”
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আমাকে কীসে বাধা দেবে বল (এমন বিশুদ্ধভাষী হতে)! আমি তো কুরাইশদেরই একজন এবং আমাকে স্তন্যপান করানো হয়েছে সা‘দ গোত্রে”।
বইয়ের নাম | রউফুর রহীম : নবি-জীবনের বিশুদ্ধ ও বিস্তারিত গ্রন্থনা- ১ম খণ্ড |
---|---|
লেখক | ড. আলী মুহাম্মদ আস-সাল্লাবী আবু তাসমিয়া ফখরুল ইসলাম |
প্রকাশনী | সিয়ান পাবলিকেশন |
সংস্করণ | প্রথম প্রকাশ, ২০১৯ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 480 |
ভাষা | বাংলা |