আত-তাওহীদ
আত-তাওহীদ গ্রন্থটি কয়েকটি স্বীকৃত ধারণার পটভূমিতে রচিত। ইসলামের বিশ্ব-উম্মাহ্ তর্কাতীতভাবেই আধুনিক কালের সবচেয়ে হতভাগ্য সংস্থা। একথা সত্য যে, জনসংখ্যার দিক দিয়ে এ উম্মাহ বৃহত্তম, ভূমি এবং সম্পদের দিক দিয়ে সবচেয়ে বিত্তবান, উত্তরাধিকারের দিক দিয়ে মহত্তম এবং সবচেয়ে প্রাণবন্ত আদর্শের একমাত্র অধিকারী। তা সত্ত্বেও, এই উম্মাহ হচ্ছে বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থার একটি অতিশয় দুর্বল উপাদান। এটি বহুসংখ্যক ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রে খণ্ডিত। অপেক্ষাকৃত কম সাম্প্রতিক অতীতে আরব উপদ্বীপ, উত্তর এবং পশ্চিম আফ্রিকায় সালাফিয়া আন্দোলন যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো, সেগুলো সাম্প্রতিক কালের প্রয়াসগুলো অপেক্ষা অধিক সফল হয়েছিল। কারণ, এ সব আন্দোলন উম্মাহর অধঃপতনের গভীরমূল কারণগুলো বুঝতে চেয়েছে এবং অধিকতর মৌলিক প্রতিকারের প্রয়াস পেয়েছে। নিশ্চয়ই শতাব্দীর অভিজ্ঞতার বদৌলতে ইখওয়ানুল মুসলিমীন আন্দোলন এই ব্যবধান পূরণের চেষ্টা করে। এর আরম্ভটি ছিলো চমৎকার, কিন্তু তার গতি বজায় রাখতে পারল না। যে সংগ্রামে তার বিজয় অর্জন সম্ভব ছিলো না তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ার ট্রাজেডি ছিলো তার একটি ক্ষুদ্র ত্রুটি; আরও গুরুতর ট্রাজেডি ছিলো ইসলামের এমন একটি রূপ স্পষ্ট করে তোলায় তার অক্ষমতা, যে রূপটি হবে মানবজীবনের প্রতিটি মুহূর্তের আধুনিক মানবিক কর্মকান্ডের প্রতিটি পর্যায়ে প্রাসঙ্গিক। ইসলামের বিশ্বউম্মাহর আর পুনরুত্থান ঘটবে না অথবা তা ‘উম্মাহ’ ওয়াসাত এর রূপ নেবে না, কেবলমাত্র তার মাধ্যম ছাড়া, যা চৌদ্দশ বছর আগে একে দিয়েছিল এর অস্তিত্বের ভিত্তি। মুসলিম তরুণ সমাজের শিক্ষার জন্য এই পুস্তকটি বাস্তবতার ইসলামী দৃষ্টি পেশ করার প্রয়াস পেয়েছে। তরুণ সমাজকে প্রকৃত আত্মসংস্কারের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে যেন সালাফিয়ার আন্দোলনের মহান সংস্কারকে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব, মুহাম্মদ ইদ্রিস সানুসি, হাসান আল বান্না এবং অন্যদের গভীর চিন্তা ও অন্তর্দৃষ্টিকে বর্তমানের পাশাপাশি স্থাপন করা যায়। মানুষের চিন্তা ও কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসলামের প্রাসঙ্গিকতা এখানে বিশ্লেষিত ও সম্প্রসারিত হয়েছে এই আশায় যে, সব ক্ষেত্রের প্রত্যেকটিতে এটি সংস্থার কর্মসূচীর একটি বুনিয়াদী পুস্তক হবে। ইসলামের সারনির্যাস ও মর্মমূল তৌহীদ হওয়ায়, আত-তাওহীদই হচ্ছে বইটির নাম, এবং সেই প্রাসঙ্গিকতার উপকরণ ও আধারও বটে। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা, সকল বিষয়ের উপর মহত্তম বিষয়ে তার এক বান্দার সামান্য অবদান হিসেবে এই পুস্তকটি যেন তিনি গ্রহণ করেন, এবং আল্লাহ যেন পাঠকদের সত্যের দিকে পরিচালিত করেন। এই পুস্তকটি ইতিবাচকভাবে সত্যকে উপস্থাপন করে অবদান রাখলো কিনা অথবা নেতিবাচকভাবে যা সত্য নয় তা প্রদর্শন করে দায়িত্ব পালন করলো কিনা, যাই হোক না কেন, গ্রন্থকার এ বিষয়ে সন্তুষ্ট যে আল্লাহ তায়ালা তার এই পুস্তককে সেই লক্ষ্যের দিকে একটি উপায় হিসেবে ব্যবহার করবেন।
বইয়ের নাম | আত-তাওহীদ |
---|---|
লেখক | ড. ইসমাঈল রাজী আল ফারুকী |
প্রকাশনী | বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বি.আই.আই.টি) |
সংস্করণ | |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | |
ভাষা |