বই : চে গুয়েভারার ডায়েরি

প্রকাশনী : কলি প্রকাশনী
মূল্য :   Tk. 350.0   Tk. 263.0 (25.0% ছাড়)
 

চে গুয়েভারার ডায়েরি: গেরিলা যুদ্ধের এক অনবদ্য দলিল আর্নেস্তো চে গুয়েভারা (১৪ জুন,১৯২৮-৯ অেেক্টাবর ১৯৬৭) ছিলেন একজন আর্জেন্টেনীয় মাক্সবাদী বিপ্লবী,চিকিৎসক,কবি,লেখক,গেরিলা নেতা,কূটনীতিবীদ এবং সামরিক তত্ত্ববিদ। কিউবা বিপ্লবের অন্যতম প্রধান রূপকার ছিলেন তিনি। তাঁর প্রকৃত নামছিল এর্নেস্তো গেভারা দে লা সের্না। ডাক নাম তেতো। তবে তিনি সারা বিশে^ চে গুয়েভারা,লা চে বা কেবলমাত্র চে নামেই পরিচিত। তিনি নিজেকে একজন মেধাবী,নির্ণায়ক,সাহসী এবং সফল বিগ্রেড কমা-ার হিসেবে প্রমাণ করেছেন। ইতিহাসের এক নন্দিত চরিত্র হিসেবে বিভিন্ন জীবনী,স্মৃতিকথা,প্রবন্ধ,তথ্যচিত্র,গান ও চলচ্চিত্রে চে’র চরিত্রের নানা দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রাজনৈতিক সচেতন এক মধ্যবিত্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। বাবা গুয়েভারা লিঞ্চ ছিলেন একজন স্থাপত্যবিদ। মা সেলিয়া ডি লা সের্না ছিলেন নারীবাদী এবং সর্বজনীন ভোটাধিকার আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। তিনি বেড়ে উঠেছিলেন এমনই এক পরিবারে,বাম রাজনীতির প্রতি ছিল যাদের প্রবল ঝোঁক এবং তখন থেকেই চে গুয়েভারা এক বিশাল রাজনৈতিক পরিম-লের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। খুব ছোটবেলা থেকেই সমাজের বঞ্চিত,অসহায় ও হতদরিদ্রদের প্রতি ছিল তাঁর গভীর মমত্ববোধ। যুবক বয়সে মেডিসিন বিষয়ে পড়ার সময়ে চে দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। দীর্ঘ এ মোটরসাইকেল ভ্রমণে চে একদিকে যেমন দেখেন নি¤œশ্রেণির মানুষের দুঃখ,দুর্দশা,বঞ্চনা,নিপীড়ন আর অন্যদিকে দেখেন শাসকের শোষণ ও নির্যাতন। যা তাকে অসহায় মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুধাবন করার সুযোগ এনে দেয়। চে বুঝতে পারেন ধনী-গরিবের এই ব্যবধান ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য বিপ্লব ছাড়া কোনো উপায় নেই। তখন থেকেই তিনি মার্ক্সবাদ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। সে সময় তিনি কার্ল মার্ক্স,ভøাদিমির,লেলিন,রবার্ট ফ্রস্টের বইও পড়েছেন। কোনো ধর্মে বিশ^াসী না হয়ে এভাবেই নিজেকে একজন সমাজসচেতন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলেন। তিনি উপলবদ্ধি করেছিলেন,এই সকল মানুষের সাহায্য করতে হলে তাকে চিকিৎসা পেশা ছেড়ে সশস্ত্র সংগ্রামের রাজনৈতিক পথটাকেই বেছে নিতে হবে। বিপ্লবের অগ্নি পুরুষ ও গেরিলা নেতা চে মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন মাথা উঁচু করে। বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে খ্যাতিমান সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবীদের অন্যতম চে গুয়েভারা। স্বপ্ন দেখতেন এমন এক পৃথিবীর যেখানে ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নেই’- এ প্রবাদটি প্রাণ পাবে। জগতের কল্যাণে কিছু একটা করার তাগিদটা মনের ভেতর শেকড় গেড়েছিল বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। তিনি মনে প্রাণে বিশ^াস করতেন বিপ্লব ছাড়া মুক্তি সম্ভব নয়। স্বপ্ন ছিল লাতিন আমেরিকার গ-ি পেরিয়ে বিপ্লবের ঝা-া হাতে নিয়ে ঘুরবেন দেশ থেকে দেশে,মুক্তিকামীদের একজন হয়ে সারা বিশ^কে নিপীড়ন থেকে মুক্ত করবেন,মানুষে মানুষে সাম্য প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি সা¤্রাজ্যবাদের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত করবেন সকল দেশকে কারণ সারা বিশ^কেই তিনি নিজের স্বদেশ বানিয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে যোগ দিলেন কিউবা বিপ্লবে। কিউবার সফল বিপ্লবের পর চে কিউবার মন্ত্রী হন। শুধু মন্ত্রী নন,সারা পৃথিবীর কাছে এক মহানায়ক হয়ে ওঠেন। কিন্তু তাঁর দেশ তো আমেরিকা। তিনি লাতিন আমেরিকার নিপীড়িত মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে সবসময় প্রস্তুত ছিলেন। আবারো নামলেন পাহাড়-জঙ্গলে দুরন্ত গেরিলার লড়াকু জীবনে। কঙ্গোতে ব্যর্থ বিপ্লবের পর চে বলিভিয়ায় যান। চে’র জীবনের শেষের দিনগুলো কেটেছে বলিভিয়ার পাহাড় আর জঙ্গলে। ৭ নভেম্বর ১৯৬৬ থেকে ৭ অক্টোবর ১৯৬৭ সালের প্রতিটি দিনের প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা লিপিবদ্ধ হয়েছে চেগুয়েভারার ডায়েরি’তে। এগারো মাসের সশস্ত্র বিপ্লবের সময় জুড়ে যে নারকীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে গেরিলা বাহিনীকে তার অনন্য দলিল এই ডায়েরি। নিপীড়িত মানুষের মুক্তির সুতীব্র আকাক্সক্ষায় সদালড়াকু এক বিপ্লবীর জীবনের শেষ দিনগুলো কিভাবে কেটেছে তা লিপিবদ্ধ হয়েছে ডায়েরির পাতায়। এই ডায়েরিতে রাজনৈতিক আলাপ প্রায় নেই বললেই চলে। চে কেবল গেরিলা বাহিনীর পথচলা,কর্মপরিকল্পনা এবং ঘটনাপ্রবাহ নিয়েই এই ডায়েরি লিখেছেন। ডায়েরির শেষ লেখাটা চে লিখেছেন রাত ২টা থেকে ভোর ৪ টার মধ্যে। চে’র মৃত্যু এই ডায়েরির অংশ নয়। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত তিনি ডায়েরি লিখেছেন। ১৯৬৮ সালের জুন মাসেহাভানা থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় এ ডায়েরিটি। সভ্যতা স্থাপনের পর থেকেই যুগে যুগে শাসক এবং শোষকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে নিপীড়িত মানুষেরা। সময়ের প্রয়োজনে স্বাধীনতাকামী মানুষকে বেছে নিতে হয়েছে সশস্ত্র বিপ্লবের পথ। ভবিষ্যতের সকল সশস্ত্র বিশেষত গেরিলা সংগ্রামের জন্য চে’র ডায়েরি এক প্রেরণা। চে গুয়েভারার ডায়েরি’তে আমরা দেখি চে বলিভিয়ার সংগ্রামের প্রতিদিনের ঘটনা প্রতিদিন নিখুঁতভাবে লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি প্রতি মাসের শেষে ঐ মাসের উপর একটি সার্বিক বিশ্লেষণও লিখে রাখতেন। তিনি কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে ডায়েরি লিখতেন যাতে শত্রু পক্ষের হাতে ধরা পড়লেও এখান থেকে তারা যেন খুব বেশি বা গোপনীয় তথ্যগুলো উদ্ধার করতে না পারে। ডায়েরির লেখক চে নিজে হলেও তাঁর সম্পর্কে খুব একটা লেখা পাওয়া যায় না ডায়েরিতে। তিনি ডায়েরি লিখেছেন নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে।

বইয়ের নাম চে গুয়েভারার ডায়েরি
লেখক আর্নেস্তো চে গুয়েভারা  
প্রকাশনী কলি প্রকাশনী
সংস্করণ
পৃষ্ঠা সংখ্যা
ভাষা

আর্নেস্তো চে গুয়েভারা