সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস ১
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের শিক্ষার্থীদের রােবটিকস, আইওটি, প্রােগ্রামিং প্রভৃতি বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা প্রয়ােজন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ রােবট অলিম্পিয়াডের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের স্কুলপর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে । রােবটিকসে যাত্রা শুরু হয়। প্রথমবারেই আন্তর্জাতিক রােবট অলিম্পিয়াডে জুনিয়র গ্রুপে স্বর্ণপদক বিজয়ে রােবটিকসের প্রতি বাচ্চাদের আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে জানতে চায় কীভাবে তারা রােবটিকসে যাত্রা শুরু করবে, কেমন করে ধাপে ধাপে সহজ রােবটিকসের প্রজেক্ট শুরু করে ধীরে ধীরে তার গভীরে যাবে, বাংলা ভাষায় কী কী রিসাের্স তাদের জন্য আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলে সত্যি, বাংলা ভাষায় রােবটিকস শেখার রিসাের্স খুবই কম আর স্কুলপর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপযােগী রিসাের্স তাে নেই বললেই চলে। রােবটিকসের আন্দোলনকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হলে বাংলা ভাষায় বইয়ের কোনাে বিকল্প নেই। মিশাল দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ওপেন সাের্স নেটওয়ার্ক ও মাসল্যাবের সঙ্গে যুক্ত। কেমন করে পরম মমতা ও ভালােবাসায় সায়েন্স অলিম্পিয়াড, সায়েন্স কংগ্রেস, আইওটি ফিয়েস্তা, আরডুইনাে ডে, রােবট অলিম্পিয়াডের জন্য রাত-দিন এক করে কাজ করে তা দেখার সুযােগ খুব কাছ থেকে পেয়েছি। মিশাল যখন আমাকে জানাল যে স্কুলপর্যায়ের ছেলেমেয়েদের রােবটিকস শেখার জন্য সে একটা বই লিখতে চায়, ওকে উৎসাহ জুগিয়েছি বইটি লেখার জন্য। কিন্তু এত অল্প সময়ে এমন ঢাউস বই লিখে ফেলবে, সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। রােবটিকসের প্রতি ভালােবাসা,
শিশুদের প্রতি ভালােবাসা— এ দুইয়ের মিশেল যখন একসঙ্গে হয়, তখন কি আর কাউকে থামিয়ে রাখা যায়? মিশালকে অনেক ধন্যবাদ এই কঠিন কাজটি নিজ দায়িত্বে কাঁধে তুলে নেওয়ার জন্য। সৃষ্টির উল্লাসে রােবটিকস’ বইটির পাণ্ডুলিপিটি প্রথম থেকেই দেখার সুযােগ আমার হয়েছে। কঠিন ভাষা এড়িয়ে শিশুদের উপযােগী করে সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় রােবটিকসের কঠিন কঠিন বিষয় খুব সুন্দর করে এ বইয়ে তুলে ধরেছে মিশাল। সবচেয়ে ভালাে লেগেছে অভিভাবকদের জন্য প্রথমেই একটি অধ্যায় যুক্ত করার বিষয়টি। গত কয়েক বছর রােবট অলিম্পিয়াডের বাচ্চাদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, অভিভাবকেরা প্রায়ই অযাচিত ও অন্যায়ভাবে বাচ্চাদের ওপর চাপ প্রয়ােগ করেন। অভিভাবকদের বুঝতে হবে রােবটিকসের প্রতি আগ্রহ ও ভালােবাসা থাকলে ওদের আর থামিয়ে রাখা যাবে না; নিজ আগ্রহেই ওরা কাজ শিখবে। প্রতিযােগিতায় ভালাে ফলাফলের চেয়ে মুখ্য ধাপে ধাপে প্রবলেম সলভিংয়ের মাধ্যমে বিষয়ের গভীরে ঢােকা। আশা করি এ অধ্যায়টি পড়ে আমাদের অভিভাবকদের বােধােদয় হবে। রােবটিকসের বেসিক বিষয়গুলাের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে বইয়ের মূল অধ্যায় শুরু হয়েছে। এর ফলে নতুন শিক্ষার্থীরাও সহজে বিষয়গুলাে হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে। খুব সহজে হাতের কাছে থাকা জিনিসগুলাে দিয়ে রােবটিকসের খুদে প্রজেক্ট থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে আরডুইনাে, এলইডি ব্যবহার করতে শেখা; তারপর সেন্সরের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে। রােবটে দারুণ সব ফিচার যােগ করা; রােবটটিকে চলতে শেখানাে— এ যেন এক জাদুর হাতছানি। একবার শুরু করতে পারলে এই হাতছানি থেকে নিজেকে দূরে রাখা মুশকিল। বইটির আরও একটি উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য হলাে, এখানে সব সমস্যার সমাধান দিয়ে দেওয়া হয়নি; বরং কীভাবে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে সমাধান করতে হবে, সে ব্যাপারে আলােকপাত করা হয়েছে। এর ফলে শিশুদের সমস্যা সমাধানে দক্ষতাও বাড়বে। বইয়ের দুটি খণ্ডেরই শেষ অধ্যায় লেখা হয়েছে রােবট অলিম্পিয়াডের ওপর। রােবট অলিম্পিয়াড নিয়ে বাংলায় এখন পর্যন্ত একমাত্র রিসাের্স এ বইটি। অলিম্পিয়াডের বিভিন্ন প্রতিযােগিতায় অংশগ্রহণের নিয়মকানুন।
বইয়ের নাম | সৃষ্টির উল্লাসে রোবটিকস ১ |
---|---|
লেখক | মিশাল ইসলাম |
প্রকাশনী | আদর্শ |
সংস্করণ | |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | |
ভাষা |