চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান
আমাদের চোখের সামনে ২০২৪ সালের জুলাই—আগস্টে একটি ইতিহাস ঘটে গেল। ছাত্র—জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিষ্ঠুর একনায়ক শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে। কোটা আন্দোলনের শুরুতে ছাত্ররাও কল্পনা করেনি যে, হাসিনার পতন ঘটবে। সরকারের পতন ঘটানো তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল না। কোটা আন্দোলন রাজনৈতিক ছিল না। কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছিল।
শুরুতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা আন্দোলনকে তেমন পাত্তা দেননি। তিনি এ আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং আন্দোলনকারী ছাত্রদের রাজাকারের নাতিপুতি বলে কটাক্ষ করেন। তার এ উক্তি তার পতন ডেকে আনে এবং দেশের ইতিহাস পাল্টে দেয়। শেখ হাসিনা ছাত্রদের রাজাকার বলে উপহাস না করলে এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতি গুলিবর্ষণের নির্দেশ না দিলে কখনো তাকে লজ্জাজনকভাবে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হতো না। একথাও সত্যি যে,জয়কালে ক্ষয় নেই। মরণকালে ওষুধ নেই। শেখ হাসিনা চারবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শেষ মেয়াদে তিনি পাঁচ বছরের কার্যকাল পূর্ণ করেন। তিনি বজ্রকঠিন হাতে দেশ শাসন করেছেন। বিরোধী দলের কাছে তাকে জবাবদিহি করতে হয়নি। তিনিও নিজেও কখনো ভাবেননি যে, ২০২৪ সালে ছাত্রদের আন্দোলনে তার পতন ঘটবে। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার তাকে গণভবন ত্যাগে ৪৫ মিনিট সময় দিলে পদত্যাগ করা ছাড়া তার উপায় ছিল না। তার দলের কেউ জানতো না যে, তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।
দলের লাখো লাখো কমীর্কে বিপদের মুখে ফেলে তিনি প্রতিবেশি ভারতে পালিয়ে যান। তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসার উজ্জল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এবং আমাদের জাতীয় জীবন থেকে ফ্যাসিবাদের অভিশাপ দূর হয়েছে। আমাদের সময়ে অনেকেই এ অবিস্মরণীয় অধ্যায় প্রত্যক্ষ করেছেন। তথ্যসমৃদ্ধ বই না থাকলে আগামী প্রজন্ম অন্ধকারে থাকবে। সেই আলোকে ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান’ বইটি আগামী প্রজন্মের সঙ্গে আমাদের জাতীয় জীবনের ইতিহাসের সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবে।
বইয়ের নাম | চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান |
---|---|
লেখক | সাহাদত হোসেন খান |
প্রকাশনী | আফসার ব্রাদার্স |
সংস্করণ | প্রথম প্রকাশ, ২০২৪ |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | 448 |
ভাষা | বাংলা |