গৌড় ও পাণ্ডুয়ার স্মৃতি
যে গৌড় ও পাণ্ডুয়া এককালে বাংলাদেশের রাজধানী ছিল, তার পুরনো দালান ইমারতের মধ্যে এখনো যেগুলো অজ্ঞাতভাবে বা ভগ্নদশায় নিপতিত অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে এবং যেসব শিলালিপি উভয় স্থানে পাওয়া গেছে, তারই বিবরণী হলো এ গ্রন্থ। এর জন্য একটা ভূমিকা লিখতে গিয়ে সর্বপ্রথমে বইখানার বৈচিত্র্যময় ইতিহাস সম্পর্কে একটা সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্রদান প্রয়োজন। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে রাজপ্রতিনিধি লর্ড কার্জন তাঁর প্রাচীন কীর্তি সংরক্ষণ পরিকল্পনার ব্যাপারে মালদহ পরিদর্শনে যখন গমন করেন, এ গ্রন্থের গ্রন্থকার তখন সরকারি পূর্ত বিভাগের একজন কর্মচারী ছিলেন। গৌড় ও পাণ্ডুয়ার প্রাচীন কীর্তিরাজি সম্পর্কে একটি বিবরণী রচনা করে তিনি তখন রাজপ্রতিনিধিকে দিয়েছিলেন এবং এ জন্যই ১৯০৩ খ্রিস্টাপে প্রাদেশিক সরকার তাঁকে একশ টাকা পুরস্কারও প্রদান করেন। গভর্নমেন্ট তখন তাঁর রচিত বিবরণীটি প্রকাশ করার প্রতিশ্রুতিও প্রদান করেছিলেন। সম্ভবত উপযুক্ত প্রামাণ্য গ্রন্থাদির অভাবে পাণ্ডুলিপি সংশোধন গ্রন্থকারের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় এবং পুরাতত্ত্ব বিভাগের সহায়ক সমালোচনা সত্ত্বেও অবশেষে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ব্যাপকভাবে পরিবর্ধিত আকারে ও বহু ছবিসহ গ্রন্থখানা সম্পন্ন করা সম্ভবপর হয় এবং গ্রন্থকার সরকারি অনুমোদনের জন্য তা পেশ করেন।
এভাবে অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ায় পুরনো চিঠিপত্র সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল এবং বইয়ের সংশোধিত পাণ্ডুলিপি সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বেই সরকার সংবাদ পায়, ১৯২৬ সালের ১৪ নভেম্বর তারিখে গ্রন্থকার পরলোকগমন করেছেন। পাণ্ডুলিপিখানা আরো সংশোধন বিষয়ে আলোচনা চলতে থাকে এবং ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে পাণ্ডুলিপির আরো উন্নতি সাধন ও গ্রন্থখানা মুদ্রণের তদারক করার জন্য আমাকে অনুরোধ করা হয় ।
১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে গ্রন্থকারের বর্ণনা যথাসম্ভব প্রকৃত স্থানে গিয়ে। মিলিয়ে দেখার উদ্দেশ্যে আমি আবার মালদহে গমন করি। কিন্তু টাইপ করা পাণ্ডুলিপি পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, গ্রন্থকারের ঐতিহাসিক বর্ণনাসমূহের সংশোধন ও অনাবশ্যক পৌনঃপুনিকতা হ্রাস করার উদ্দেশ্যে আরো সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। এরপর বইখানা অন্তত তিনবার সংশোধন করা হয়েছে—দুবার টাইপ করা কপি তৈরি করে এবং তৃতীয়বার প্রেসে প্রুফ দেখার সময়ে। বর্তমান আকারে বইখানা ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে দাখিল করা পাণ্ডুলিপি থেকে অনেকাংশেই ভিন্নতর রূপ প্রাপ্ত হয়েছে, বলা যায়। বইয়ের পাণ্ডুয়া অংশ এবং শেষ পরিচ্ছেদটি নতুনভাবে বর্ধিত আকারে লিখতে
বইয়ের নাম | গৌড় ও পাণ্ডুয়ার স্মৃতি |
---|---|
লেখক | চৌধুরী শামসুর রহমান খান সাহেব আবিদ আলী খান |
প্রকাশনী | দিব্য প্রকাশ |
সংস্করণ | |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | |
ভাষা |