বাংলার ইতিহাস
প্রাচীন যুগে বাংলাদেশের কোনো একক রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক ভূখ- ছিল না। অবশ্য নামের দিক দিয়া প্রাচীনকালের বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল সরকারিভাবে পু-্রবর্ধনভুক্তি নামে পরিচিতি ছিল। সামগ্রিকভাবে বাংলার জনগণের মধ্যে সামাজিক, ধর্মীয় ও ভাষাগত সাদৃশ্য থাকা সত্ত্বেও দেশে অখ- রাজনৈতিক সত্তা কোনো সময়েই প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে নাই। প্রাচীন বাংলা ক্ষুদ্র-বৃহৎ রাজ্যে বিভক্ত ছিল। সুতরাং প্রাচীন বাংলার ইতিহাস বলিতে এই সমস্ত ক্ষুদ্র-বৃহৎ রাজ্যের ইতিহাসকেই বুঝায়। বলাবাহুল্য, প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে কোনো রাজ্যেরই ধারাবাহিক ইতিহাস রচনা করা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় বাংলাদেশের সামগ্রিক ও সুসামঞ্জস্য ইতিহাস রচনা এখনও সুদূরপ্ররাহত। একজন প-িত দুঃখ করিয়া লিখিয়াছেন, বাঙালি একটি আত্মবিস্মৃত জাতি। সম্ভবত তিনি বাঙালিদের নিজেদের ইতিহাস রচনায় পরাক্সমুখতার প্রতি নির্দেশ করিয়াই এইরূপ উক্তি করিয়াছেন। দীর্ঘদিন ধরিয়া বাংলার ইতিহাস বলিতে কেবল জনশ্রুতিভিত্তিক কিছু রচনা ও কতকগুলি কুলজী গ্রন্থ ছাড়া বিশেষ কিছুই ছিল না।
বর্তমান গ্রন্থটি আবিষ্কৃত তথ্য এবং ঐতিহাসিক আলোচনার ভিত্তিতে রচিত হইয়াছে। রচনার কাজে প্রকাশিত প্রবন্ধ ও গ্রন্থসমূহের সাহায্য গ্রহণ করা হইয়াছে। ইতিহাসের আনুপূর্বিক ঘটনাপ্রবাহের প্রতি লক্ষ্য রাখা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় তথ্যাদির অভাবে বাংলার ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয় নাই। যেখানে তথ্যের অভাব সেখানে অনুমানের উপর ভিত্তি করিতে হয়। কিন্তু ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে অনুমানমূলক সিদ্ধান্তের অবাধ ব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিতর্কিত বিষয়সমূহভিত্তিক অনুমানমূলক বর্ণনার দ্বারা গ্রন্থটির কলেবর বৃদ্ধি না করিয়া প্রামাণিক তথ্যভিত্তিক বর্ণনার উপরই অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে।
পাঠক মহলে গ্রন্থটি গৃহীত হইলে পরিশ্রম সার্থক হইয়াছে মনে করিব।
বইয়ের নাম | বাংলার ইতিহাস |
---|---|
লেখক | সুনীতিভূষণ কানুনগো |
প্রকাশনী | আফসার ব্রাদার্স |
সংস্করণ | |
পৃষ্ঠা সংখ্যা | |
ভাষা |